গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রামের সীমান্তবর্তী তিস্তা নদীর ওপর নির্মিত সেতুর কাজ প্রায় শেষের পথে। চলতি জুলাই মাসের শেষেই এটি যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। সেতুটির দৈর্ঘ্য ১,৪৯০ মিটার এবং নির্মাণ ব্যয় হয়েছে ৯২৫ কোটি টাকা। এটি গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিপুরঘাট ও কুড়িগ্রামের চিলমারী ঘাটকে সংযুক্ত করছে।
সেতুটি শুধু একটি অবকাঠামো নয়, এটি ঘিরে গড়ে উঠেছে একধরনের বিনোদনকেন্দ্র। প্রতিদিন শত শত মানুষ পরিবার নিয়ে সেতু দেখতে আসছেন, কেউ হাঁটছেন, ছবি তুলছেন, আবার কেউ নদীতে গোসল করছেন। শিশুদের জন্য নাগরদোলা, খেলনার দোকান ও খাবারের অস্থায়ী দোকানও বসেছে। এ কারণে এলাকা হয়ে উঠেছে উৎসবমুখর।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, আগে এখানে ছিল শুধু একটি নৌঘাট আর দু-একটি দোকান। এখন সেখানে জমে উঠেছে বাজার, বেড়েছে মানুষের আনাগোনা এবং ব্যবসা-বাণিজ্য। সুন্দরগঞ্জের তিস্তা সেতু বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক শরিয়ত উল্যা বলেন, “১৯৯০ সাল থেকে আমরা সেতুর জন্য আন্দোলন করেছি। এখন আমাদের স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে।”
৪ জুলাই সেতু এলাকা পরিদর্শনে যান স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিবসহ এলজিইডির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। তাঁরা জানান, মূল সেতুর কাজ শেষ, বাকি কিছু সংযোগ সড়ক ও বিদ্যুৎ-সংযোগের কাজ দ্রুত শেষ করে চলতি মাসেই সেতু চালু করার চেষ্টা চলছে।
সেতুটি চালু হলে কুড়িগ্রাম থেকে ঢাকার দূরত্ব ১৩৫ কিলোমিটার কমে যাবে, সময় বাঁচবে প্রায় ২ থেকে ২.৫ ঘণ্টা। এর প্রভাবে উত্তরাঞ্চলের যোগাযোগব্যবস্থা উন্নত হবে, গাইবান্ধার মতো পশ্চাৎপদ অঞ্চলে শিল্প-কারখানা গড়ে উঠবে এবং কর্মসংস্থানও বাড়বে।
গাইবান্ধা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী উজ্জ্বল চৌধুরী বলেন, “এটি দেশের এলজিইডির সবচেয়ে বড় প্রকল্প। সেতুটি চালু হলে এ অঞ্চলের মানুষ সরাসরি উপকৃত হবেন। এটি শুধু যোগাযোগ নয়, উন্নয়নের বড় মাধ্যম হয়ে উঠবে।”
