কুড়িগ্রামের
উলিপুর উপজেলার গাজীপুর বাজারে অবস্থিত একটি ছোট হোটেল। বাইরের চেহারা
সাধারণ হলেও এর ভেতরে রয়েছে অসীম ভালোবাসা ও সহানুভূতি। এটি স্থানীয়দের
কাছে পরিচিত ‘পাগলা হোটেল’ নামে। যদিও নামটা শুনে অনেকের মনে হতে পারে
এখানে কোনো পাগলামি রয়েছে, বাস্তবে এটি একটি অনন্য মানবিক উদাহরণ।
হোটেলটির
মালিক রনজু মিয়া ছোটবেলা থেকেই অন্যদের কষ্টে ভোগার দৃশ্য দেখে তার মধ্যে
মানবিক অনুভূতি জাগ্রত হয়ে উঠেছিল। বিশেষ করে মানসিক ভারসাম্যহীন ও অসহায়
মানুষদের প্রতি তার এক বিশেষ সহানুভূতি ছিল। নিজের ছোট্ট খাবারের হোটেলটি
খুলে, রনজু শুরু করেন এক দৃষ্টান্তমূূলক উদ্যোগ এখানে মানসিক ভারসাম্যহীন
মানুষরা বিনামূূল্যে খাবার পাবেন।
এই উদ্যোগটি ধীরে ধীরে এলাকাবাসীর
মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এবং তাদের মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়ে 'পাগলা হোটেল' নামটি।
আজ এটি শুধু একটি খাবারের দোকান নয়, বরং সেখানকার প্রতিটি খাবারের টুকরা
হয়ে ওঠে এক টুকরা মানবতা। প্রায় এক বছর ধরে প্রতি শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে
বিকেল ৪টা পর্যন্ত এই হোটেলে ফ্রি খাবারের ব্যবস্থা থাকে। আশেপাশের বিভিন্ন
গ্রামের মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষ এখানে আসেন এবং রনজু মিয়া নিজেই তাদের
জন্য খাবার প্রস্তুত করে পরিবেশন করেন।
এলাকার বাসিন্দারা মনে করেন,
যেখানে সবাই নিজেদের স্বার্থের পেছনে ছুটছে, সেখানে রনজু মিয়ার এই উদ্যোগ
আমাদের মনে মানবিকতার উজ্জ্বল আলো জ্বালিয়েছে। তার এই অসাধারণ উদ্যোগ শুধু
খাবার নয়, শিখিয়েছে মানুষকে সহানুভূতির প্রকৃত অর্থ। রনজু মিয়া নিজের
বিশ্বাসে দৃঢ় যে, “মানুষকে ভালোবাসার মধ্েেযই জীবনের আসল শান্তি নিহিত
রয়েছে। তার মতে, সমাজের বঞ্চিত ও অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়ানোই জীবনের
সবচেয়ে বড় অর্জন।
‘পাগলা হোটেল’ এ শুধুমাত্র খাবার নয়, মানুষ সেখানে
অনুভব করে এক অবর্ণনীয় ভালোবাসা ও সহানুভূতির ছোঁয়া। রনজু মিয়ার এই মানবিক
উদ্যোগ সমাজের প্রতি তার গভীর ভালোবাসা ও দায়বদ্ধতার এক চমৎকার উদাহরণ। এই
উদ্যোগ এক নতুন আলোর পথ দেখাচ্ছে, যেখানে মানুষের জন্য মানবতা এখনও অটুট
রয়েছে।
Author: Ulipur71 News
Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.
এই বিভাগের আরও খবর
- ব্লগার মন্তব্য
- ফেইসবুক মন্তব্য
